Visual Effects: 100 Years of Inspiration
It's hard to believe they've been working on visual effects for 100 years, but it's amazing what has...
ভারতীয়রা নিজেদের মধ্যে সুবিধে অসুবিধে নিয়ে কথাবার্তা বলার অনেক সুবিধে পেতে পারবে যদি একটি সাধারণ বর্ণলিপি সব স্থানীয় ভাষার বিকল্প হিসাবে ব্যবহার করার চলন হয়. এজন্যে রোমান অক্ষর সবথেকে বেশি কার্যকারী হবে বলেই আমার ধারণা. যেহেতু শিক্ষিত লোক মাত্রই ইংরিজিতে পারদর্শী হয়. কিন্তু তাঁদের মধ্যে খুব কম মানুষই নিজের মাতৃভাষায়ও অতটাই় পারদর্শী হতে পারেন. অথচ মাতৃভাষার ওপর যথেষ্ঠ দখল থাকা সত্ত্বেও ইংরিজি জ্ঞানের অভাব থাকলে ভিন্ন ভিন্ন অঞ্চলের মানুষদের মধ্যে মনের ভাবের আদান প্রদান করার পক্ষে প্রায়্ক্ষত্রেই আঞ্চলিক ভাষাই অন্তরায় হযে যায়. ভারতের হিউম্যান রাইটস বা মানবাধিকার সংক্রান্ত মন্ত্রনালয়ের কেন্দ্রীয় মন্ত্রী মাননীয় কপিল সিবাল মহাশয় সম্প্রতি দশম শ্রেনীর বোর্ডের পরীক্ষা তুলে দেবার ব্যবস্থা নেওয়ার কারণে অভিভাবক এবং শিক্ষার্থী উভয় তরফেরই অনেকের মানসিক চাপ কমেছে. ঠিক এইভাবেই যদি বিভিন্ন ভাষাভাষী অঞ্চলের স্থানীয় স্কুলের টিচারদেরও ভিন্ন ভাষার অঞ্চলের স্কুলে নিয়োগ বা বদলির নিয়ম চালু করা যেত এবং ওই বদলি হয়ে আসা টিচারের দায়িত্বে তাঁর অঞ্চলের ভাষাটুকু শেখানো ও পরীক্ষা নেওয়ার দযিত্ব দেওয়া যেত, তাহলে ভারতীয়দের মধ্যেও মানসিক দুরত্ব কমতো নিশ্চয়ই.
গ্রীক, মুঘল, পর্তুগীজ, ফরাসী প্রভৃতি বিদেশীদের ভারতবর্ষে আসা শুরু হয়েছিল অনেক আগে থেকেই. তারও অনেক আগে থেকেই বহুরকমের ভাষা স্থানীয় ভাষা হিসেবে এদেশে প্রচলিত আছে. বৃটিশরা ভারতে আসার আগে পর্যন্ত ঐসব ভাষা নিয়ে চর্চা করা বা পড়াশোনা করাটা ততটা গুরুত্বপুর্ন ছিলনা. চলনও ছিলনা. আসলে লেখাপড়া করত হিন্দুদের মধ্যে শুদ্ররা বাদে ব্রাহ্মণ ক্ষত্রিয় এবং বৈশ্য. এছাড়া বৌদ্ধ, জৈণ, মুসলমান প্রভৃতিদের মধ্যেও খুবই কম হাতে গোনা যায় এমন কয়েকজন মানুষ. সাধারণ মানুষের ধারনাই ছিলনা যে লেখাপড়া শিখলেই খুব সহজে উপার্জন করা যাবে. ইংরিজি লিখতে এবং পড়তে পারলেই নিয়মিত রোজগার করার সুযোগ ব্রিটিশই প্রথম বাঙালিদের তথা ভারতীয়দের জন্য করেছিলো.
এক অঞ্চলের লোক অন্য অঞ্চলের লোকেদের কথাবার্তা বুঝতে পারতনা. এইজন্য তাদের মধ্যে দেশের জন্য জাতীয়তাবোধ বা একাত্মবোধও গড়ে উঠতে পারতনা. এরই সুযোগ নিয়ে বার বার বিদেশীরা এই দেশকে আক্রমণ করেছে এবং দখলে রাখার জন্য তারা নিজেদের মধ্যেই লড়াইও করেছে. তবে এরা, বেশীর ভাগ বহিরাগতই শুধু নিজেদের ধর্ম প্রচার করার চেষ্টা করত ও সেই সুবাদে কথা বলার জন্য নিজেদের ভাষাই ব্যবহার করত. এই সমস্ত ভাষার একটা মিশ্রিত রূপ-ই 'ঊর্দূ' ভাষা, যাকে সম্পূর্নভাবে ভারতীয় ভাষা বলা যায়. কিন্তূ ঊর্দূ ভাষার বর্ণলিপি মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন লিপির থেকে নিয়ে তৈরী হয়েছে. কিন্তূ তখন স্থানীয় ভাষাগুলোও উর্দু অক্ষর দিয়ে লেখার চলন ছিলনা.
ইদানিং অবশ্য ইংরিজি অক্ষর ব্যবহার করে আঞ্চলিক ভাষাগুলো কিছু কিছু লিখতে দেখা যাচ্ছে, তবে তা খুব ব্যাপক আকারে নয়. কেন তা হচ্ছেনা সেটাও খুঁটিয়ে দেখা দরকার. ব্যক্তিগতভাবে আমার ধারনা, ভারতবর্ষের প্রায় সবগুলি স্থানীয় ভাষারই মূল সংস্কৃত. ঐসব স্থানীয় ভাষাগুলির বর্নলিপির বিকল্প হিসাবে ইংরিজি অক্ষর কোনটা হবে তা নির্দিষ্ট করে দেওয়া নেই এবং ব্রিটিশও ইংরিজি ভাষায় পড়াশোনা শেখানোর সূচনা করার সময় থেকেই সে চেষ্টা করেনি.
অন্য সব ইউরোপিয়দের মধ্যে কেবল ব্রিটিশই প্রায় সব আঞ্চলিক ভাষার গ্রামার বই লেখা এবং তা ছাপিয়ে দেওয়ার জন্য কৃতিত্ব পাওয়ার অধিকারী.
বাংলা ভাষার প্রথম রোমান হরফে ছাপা গ্রামার বই কিন্তূ একজন পর্তুগীজ খ্রিষ্টান ধর্মযাজক লিখেছিলেন, অর্থাত সংকলন করেছিলেন. ওই ধর্মযাজকের নাম মানোয়েল ডা আস্সুমপক্যাম. উনি ১৭৩৪ সাল থেকে ১৭৪২ সাল পর্যন্ত পূর্ববঙ্গের ভাওয়ালে ছিলেন. তখন অবশ্য ভাওয়াল একটা রাজ্য ছিল. প্রসঙ্গত বলি, ভাওয়াল নামটি বাঙ্গালীদের কাছে স্মরনীয় হয়ে থাকার কারণ হল ব্রিটিশ শাসনের আমলে ভাওয়াল এসস্টেটের রাজা রমেন্দ্র রায়ের সন্যাসী হয়ে যাওয়ার পর দীর্ঘদিন ধরে মামলা চলার কাহিনী. 'সন্ন্যাসী রাজা' নামে এই নিয়ে কিছুদিন আগে একটা সিনেমাও তৈরী হয়েছিল.
পর্তুগীজ খ্রিষ্টান ধর্মযাজক মানোয়েল ডা আস্সুমপক্যাম অন্যান্য খ্রিষ্টান ধর্মযাজকদের থেকে তাঁদের সংকলন সংগ্রহ করে নিয়ে উনি নিজের মতন কোরে সম্পাদনা করেছিলেন. এরপরে পর্তুগালের রাজধানী লিসবন থেকে ১৭৪৩ সালে একটি বই প্রকাশিত হয়েছিল. বইটির পুরো নাম ছিল 'ভোকাবুলারিও এম ইডিওমা বেঙ্গল্লা এ পার্তুগুএজ ডিভিডিডো এম ডুয়াস পার্টেস'. সংক্ষেপে 'ভোকাবুলারিও'. প্রধানত ফরিদপুরের প্রচলিত ভাষাকে ভিত্তি কোরে মাত্র চল্লিশ পৃষ্ঠার ঐ বইটি. বইটিতে দুটো বিভাগ. প্রথম বিষয় বাংলা ব্যাকারণ এবং দ্বিতীয়বিভাগে রূপান্তরিত শব্দ'র তালিকা, পর্তুগীজ থেকে বাংলা শব্দ এবং বাংলা থেকে পর্তুগীজ শব্দ. তবে এগুলো সব-ই রোমান হরফে ছাপিয়ে আনা হয়েছিল পর্তুগাল থেকে. এদেশে তখনও কাগজ ছাপানোর যন্ত্রই আসেনি এবং ছাপার জন্য প্রয়োজনীয় বাংলা অক্ষরও তৈরী হয়নি.
এরপর দ্বিতীয় ছাপানো ব্যাকারণ বই'এর রচয়িতা একজন ব্রিটিশ. ন্যাথানিয়েল ব্র্যাসি হ্যালহেড, এদেশে ছিলেন ২৫শে মে ১৭৫১ থেকে ১৮ই ফেব্রুয়ারী ১৮৩০ পর্যন্ত. উনি প্রাচ্যবিশারদ, ভাষাবিদ এবং পন্ডিত মানুষ ছিলেন. এঁর লেখা ব্যাকারণ বইয়ের নাম 'এ গ্রামার অফ দ্য বেঙ্গল ল্যাঙ্গুয়েজ'. এই বইটি ১৭৭৮ সালে হুগলি থেকে প্রকাশিত হয়েছিল. প্রধানত সংস্কৃত ঘেঁষা উঁচুস্তরের বাংলা সাহিত্যর সংকলন থেকে সম্পাদিত বইটি. এই বই ছাপানো দিয়েই প্রথম বাংলা হরফ তৈরী কোরে ব্যাবহার করা এবং দেশে কাগজ ছাপানোরও সুচনা হয়েছিল. এর কৃতিত্ব দু'জনের. এঁরা হলেন চার্লস উইলকিনসন এবং পঞ্চানন কর্মকার.